🍂 আল-মাতীন 🍂
আল্লাহ সুবনাহানাহু ওয়া তা‘আলার নাম আল-মাতীন কুরআনে কেবল একবার এসেছে,
إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلْقُوَّةِ ٱلْمَتِينُ
"আল্লাহই তো রিযকদাতা, মহা শক্তিধর, প্রবল পরাক্রান্ত। "(যারিয়াত: ৫৮)
যার مَتْن আছে তিনিই আল-মাতীন। এই متن কি? অর্থ হিসেবে কঠিন (hard), তাবু ধরে রাখে যে দড়ি সেটি; তীরের মধ্যভাগ যেখানে ধরে রেখে তীর ছোড়া হয় অর্থাৎ এমন মজবুত কিছু তা কোনও কিছুর পুরোটাকে আঁকড়ে রাখে বা ধারণ করে। উপরে যে অর্থগুলো পাই সেগুলো প্রত্যেকটিই মজবুত। তাই متين বলতে বুঝায় যা শক্তিতে প্রবল। শুধু powerful বুঝায় তা না, এই power অত্যন্ত firm, স্থিতিশীল। এবং যিনি المتين তাঁর আছে utmost degree, strongest degree এবং strongest quality ধারণও করেন।
আরবিতে এর অর্থ شَديد القوَّة, extremely powerful .
আল্লাহর নাম المتين হল القويّ এর exaggerated form. তিনি কত powerful?
🍂কেউ তার থেকে escape করতে পারেনা। না তাঁর ক্বদর, না তাঁর পাওয়ার, না তাঁর শাস্তি। যা যা তাকদিরে লেখা আছে তাঁর কিছু থেকেই escape করতে পারেনা, পারবে না।
কুরআনে এসেছে-
وَأَنَّا ظَنَنَّآ أَن لَّن نُّعْجِزَ ٱللَّهَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَن نُّعْجِزَهُۥ هَرَبًا
🍂আমরা বুঝতে পেরেছি যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহকে পরাস্ত করতে পারব না, আর পালিয়েও তাঁকে অপারগ করতে পারব না। (জীন: ১২)
🍂আল্লাহর থেকে কেউ পালিয়ে থাকতে পারেনা। তাঁর decree, শাস্তি থেকে কেউ পালাতে পারেনা। মানুষ আল্লাহর দিকে ফিরে ক্ষমা চাইতে পার, কিন্তু পালাতে পারবে না।
সুরাহ তাওবাহ ( ৯:১১৮)
وَظَنُّوٓا۟ أَن لَّا مَلْجَأَ مِنَ ٱللَّهِ إِلَّآ إِلَيْهِ….
…. “আর তারা বুঝতে পারল যে, আল্লাহ ছাড়া তাদের কোন আশ্রয়স্থল নেই তাঁর পথে ফিরে যাওয়া ব্যতীত”।….
🍂এমন কোনো নিরাপদ জায়গা নাই যেখানে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা থেকে পালিয়ে থাকা যাবে। বরং আল্লাহর দিকে ফিরে গেলে নিরাপদ আশ্রয় পাওয়া যাবে।
এজন্য আমরা দুয়ায় বলি:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টির মাধ্যমে আপনার ক্রোধ হতে আশ্রয় চাই। আপনার শাস্তি হতে আপনার ক্ষমার মাধ্যমে আশ্রয় চাই। আমি আপনার থেকে সর্বপ্রকারের আশ্রয় চাই। আমি আপনার প্রশংসা গণনা করে শেষ করতে পারবো না, বরং তুমি আপনার নিজের যেরূপ প্রশংসা করেছেন, ঠিক সেরূপই। (আবু দাউদ: ১৪২৭)
🍂আল্লাহ বলেন كُن তখন তা ঘটেই এবং দুনিয়া ও আসমানে এমন কেউ নাই, এমন কিছু নাই যা তা প্রতিহত করতে পারে।
وَإِن يَمْسَسْكَ ٱللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُۥٓ إِلَّا هُوَۖ وَإِن يَمْسَسْكَ بِخَيْرٍ فَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
“আল্লাহ তোমার কোন ক্ষতি করতে চাইলে তিনি ছাড়া কেউ তা সরাতে পারবে না। আর তিনি যদি তোমার কল্যাণ করতে চান, তবে তো সব কিছুই করার তাঁর ক্ষমতা রয়েছে।” (আন'আম: ১৭)
🍂আল্লাহ আল-মাতীন, তিনি intense, شَدِيد, mighty, unconquerable ।
🍂তাঁকে কেউ পরাভূত করতে পারে না। আল্লাহ সেই পরিমান শক্তিশালী যে তা নিঃশেষ হবার নয়। এই শক্তি ক্রমশ দুর্বল হয়না, এই শক্তি fatigue দ্বারা আক্রান্ত হয় না। এই শক্তি burdensome হয়না।
আল- আহকাফ ( ৪৬:৩৩)
أَوَلَمْ يَرَوْا۟ أَنَّ ٱللَّهَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَلَمْ يَعْىَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَٰدِرٍ عَلَىٰٓ أَن يُحْۦِىَ ٱلْمَوْتَىٰۚ بَلَىٰٓ إِنَّهُۥ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
“তারা কি দেখে না যে, আল্লাহ, যিনি আকাশ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন আর ওগুলোর সৃষ্টিতে তিনি ক্লান্ত হননি, তিনি মৃতদেরকে জীবন দিতে সক্ষম? নিঃসন্দেহে তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।”
আল- বাকারাহ (২:২৫৫)
... وَسِعَ كُرْسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَۖ وَلَا يَـُٔودُهُۥ حِفْظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ…
….. “তাঁর কুরসী আকাশ ও পৃথিবী পরিবেষ্টন করে আছে এবং এ দু’য়ের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না, তিনি উচ্চ মর্যাদাশীল, মহান।”
🍂আমরা আল্লাহ তা'আলাকে যত ক্ষমতাবান, শক্তিশালী মনে করি, আল্লাহ সুবনাহানাহু ওয়া তা‘আলা তার চেয়েও অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী। এবং এই শক্তি স্থিতিশীল। সময়ের সাথে এটি হ্রাস হয়না। আল্লাহর যত সিফাত আছে তা তাঁর সৃস্টি করার ক্ষমতা, সর্বশ্রোতা/ সর্বদ্রষ্টা হওয়া তাঁর সকল সামর্থ্য, সকল সিফাত সবই সবচেয়ে শক্তিশালী ডিগ্রির।
🍂আল্লাহর পাকের শাস্তি, শাস্তি দেয়ার কৌশল সবই strongest ।
وَأُمْلِى لَهُمْۚ إِنَّ كَيْدِى مَتِينٌ
“আমি তাদেরকে (লম্বা) সময় দেই, আমার কৌশল বড়ই মজবুত”। (আরাফ: ১৮৩; ক্বলাম: ৪৫)